উইন্ডোজ ১০ মোবাইল হটস্পট কি বারবার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে? এখানেই সমাধান তার

আপনার উইন্ডোজ ১০ মোবাইল হটস্পট বারবার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে? তা আপনি বুঝতে পারছেন না কিভাবে সমাধাণ করতে হবে। তাহলে আপনার জন্য আমাদের এই আর্টিকেলটি। আমাদের এই আর্টিকেলে জেনে যাবেন কিভাবে উইন্ডোজ ১০ মোবাইল হটস্পট বারবার বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারন।
উইন্ডোজ-১০-মোবাইল-হটস্পট-বারবার-বন্ধ-হচ্ছে

উইন্ডোজ ১০ ব্যবহারকারীদের অনেকেই অভিযোগ করেন যে মোবাইল হটস্পট চালু করার পর কিছুক্ষণ পরেই নিজ থেকে বন্ধ হয়ে যায়। এর কিছু কারন যেমন ইন্টারনেট কানেকশন অস্থির থাকা, নেটওয়ার্ক অ্যাডাপ্টার সঠিকভাবে কাজ করে না, পাওয়ার মোড চালু থাকে, কিংবা ড্রাইভার আপডেটের ঘাটতি।বারবার কেনো হটস্পট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে , চলুন আপনাদের এই বিষয়ে সঠিক তথ্য জানায়।

পোস্ট সূচিপত্রঃ উইন্ডোজ ১০ মোবাইল হটস্পট কি বারবার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে?

উইন্ডোজ ১০ মোবাইল হটস্পট কিভাবে কাজ করে

উইন্ডোজ ১০ মোবাইল হটস্পট একটি অত্যন্ত কার্যকর ফিচার, যা মূলত আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপকে একটি ওয়াই-ফাই রাউটারের মতো ব্যবহার করার সুযোগ দেয়। যখন আপনার পিসিতে  ইন্টারনেট সংযোগ থাকে--হোক তা ব্রডব্যান্ড, ইথারনেট ক্যাবল, অথবা, মোবাইল ডাটা কার্ডের মাধ্যমে, তখন সেই ইন্টারনেটকে শেয়ার করে অন্যান্য ডিভাইস যেমন স্মার্টফোন, ট্যাবলেট কিংবা অন্য ল্যাপটপের ব্যবহার করা সম্ভব হয়। এই ফিচারটি চালু করতে হলে প্রথমে Settings > Network & Internet > Mobile Hotspot এ যেতে হয়।
উইন্ডোজ-১০-মোবাইল-হটস্পট


সেখানে গিয়ে কোন সংযোগ ,যেমন Wi-Fi বা Ethernet শেয়ার করতে চান তা নির্বাচন করতে হয় এবং তার পর Share my Internet Connection With Other Devices অপশন চালু করতে হয়। চাইলে আপনি নিজের পছন্দমতো নেটওয়ার্কের নাম SSID এবং পাসওয়ার্ড ও সেট করতে পারবেন, যাতে অন্যরা সহজে সংযুক্ত হতে পারে। উইন্ডোজ ১০ মোবাইল হটস্পট মূলত একটি সফটওয়্যার ভিত্তিক ভার্চুয়াল রাউটার তৈরি করে। আবার আপনার পিসির নেটওয়ার্ক অ্যাডাপ্টার একই সময়ে ইন্টারনেটে গ্রহন ও সম্প্রচার করতে সক্ষম হয়।যখন অন্য কোনো ডিভাইস সরাসরি আপনার পিসির মাধ্যমে ইন্টারনেট অ্যাক্সেস পায়।
উইন্ডোজ-১০-মোবাইল-হটস্পট

এক্ষেত্রে উইন্ডোজ নিজ থেকেই নেটওয়ার্ক ট্রাফিক ম্যানেজ করে একই সময়ে একাধিক ডিভাইসকে সংযুক্ত হতে দেয়। এটি বিশেষভাবে উপকারী হয় তখন, যখন আশেপাশে আলাদা কোনো ওয়াই-ফাই রাউটার নেই কিংবা জরুরি অবস্থায় মোবাইল, ট্যাব বা অন্যান্য ডিভাইসে দ্রুত ইন্টারনেট প্রয়োজন হয়। তবে ব্যবহার করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যে, যদি ইন্টারনেট স্পিড ধীর হয় অথবা নেটওয়ার্ক অ্যাডাপ্টার আপডেট না থাকে তবে সংযোগ অস্থির হয়ে যেতে পারে।

নেটওয়ার্ক অ্যাডাপ্টার এর সমস্যা ও সমাধান 

নেটওয়ার্ক অ্যাডাপ্টার আমাদের কম্পিউটার বা ল্যাপটপকে ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত করার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হার্ডওয়্যার। তবে অনেক সময় এটি সঠিকভাবে কাজ না করলে নেটওয়ার্ক কানেকশনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। সাধারনত নেটওয়ার্ক অ্যাডাপ্টারের সমস্যা দেখা দেয় ড্রাইভার কপারেট হয়ে গেলে, সঠিকভাবে ইনস্টল না থাকলে, হার্ডওয়্যারের সমস্যা হলে বা অপারেটিং সিস্টেমের সেটিংস সঠিকমতো কনফিগার না করা থাকলে। কখনও কখনও কম্পিউটার  ইন্টারনেট সংযোগ হারায়। আবার দেখা যায় ওয়াইফাই অ্যাডাপ্টার ডিসেবল হয়ে গেছে বা সনাক্ত হচ্ছে না।এ ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য কয়েকটি কার্যকর পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে। যদি ড্রাইভার সমস্যা থাকে তবে নতুন ড্রাইভার ইনস্টল করলে সমস্যার সমাধান হতে পারে।
উইন্ডোজ-১০-মোবাইল-হটস্পট-বারবার-বন্ধ-হচ্ছে

আবার নেটওয়ার্ক ট্রাবলশুটার ব্যবহার করলে অনেক সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমস্যাটি শনাক্ত হয়ে যায়। এছাড়া নেটওয়ার্ক সেটিংস রিসেট করেও অনেক সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। কখনো কখনো ফ্লাইট মোড বা ওয়াইফাই সুইচ বন্ধ থাকলেও সমস্যা হতে পারে। তাই সেইগুলো পরিক্ষা করা জরুরি। সর্বোপরি নিয়মিত সিস্টেম আপডেট রাখা, ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার মুক্ত রাখা এবং সঠিক ড্রাইভার ব্যবহার করলে নেটওয়ার্ক অ্যাডাপ্টারের সমস্যা অনেক অংশ কমে যায়। তাই নেতওয়ার্ক অ্যাডাপ্টার সঠিক মেইনটেইন করা ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

ইন্টারনেট কানেকশন অস্থির থাকা 

ইন্টারনেট কানেকশন অস্থির থাকা বর্তমান যুগে একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিশেষ করে যাদের কাজ, পড়াশোনা ব্যবসা অনলাইনের ওপর নির্ভরশীল। আধুনিক জীবনে ইন্টারনেট মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রমের সাথে জড়িত আছে। অনলাইন ক্লাস, মিটিং, ফ্রিল্যান্সিং কাজ বা বিনোদন মূলক কার্যক্রম সবাই এখন ইন্টারনেট নির্ভর। কিন্তু কানেকশন যদি বারবার বিচ্ছিন্ন হয় বা ধীর গতির হয়, তাহলে নানা ধরনের অসুবিধা দেখা দেয়। শিক্ষাথীরা অনলাইন ক্লাস করতে গিয়ে লেকচারের গুরুত্বপূর্ব অংশ মিস করতে পারে, আবার চাকরিজীবিরা ভার্চুয়াল মিটিংয়ে অংশ নিতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন।
ফ্রিল্যান্সারদের ক্ষেত্রে সময়মতো কাজ জমা দিতে না পারলে ক্লায়েন্টের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা হারানোর ভয় থাকে। অনেক সময় ব্যবসায়িক যোগাযোগ বা অনলাইন লেনদেন ব্যাহত হয়, যা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির কারন হতে পারে। অস্থির ইন্টারনেটের কারন হতে পারে দুর্বল নেটওয়ার্ক কাভারেজ, অতিরিক্ত ব্যবহারকারীর চাপ, নেটওয়ার্ক ডিভাইসের সমস্যা কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এসব সমস্যার সমাধানের মানসম্মত ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার নির্বাচন করা জরুরি, পাশাপাশি নিজের নেটওয়ার্ক ডীভাইস যেমন রাউটার নিয়মিত আপডেট ও রিস্টার্ট করা উচিত। প্রয়ীজন হলে কাস্টমার কেয়ারে এ অভিযোগ জানাতে হয়।

সিস্টেম সেটিংস টাইমআউট অপশন চালু রাখা

সিস্টেম সেটিংসের টাইম আউট অপশন চালু রাখা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, বিশেষ করে নিরাপত্তে ও শক্তি সাশ্রয়ের ক্ষেত্রে। বর্তমান যুগে আমরা কম্পিউটার, ল্যাপটপ কিংবা মোবাইল ডিভাইস ব্যবহারকা করি নানা ধরনের কাজের জন্য। অনেক সময় ব্যবস্তার কারনে বা ভুলে গিয়ে ডিভাইস চালি অবস্থায় রেখে আমরা অন্য কাজে চলে যাই। এ অবস্থায় যদি টাইম আউট আপশন সক্রিয় না থাকে, তাহলে ডিভাইস দীর্ঘ সময় খোলা থাকে এবং এতে বিদ্যুৎ খরচ বাড়ে, ব্যাটারি দ্রুত শেষ হয়। আবার সবচেয়ে বড় সমস্যা নিরাপত্তা ঝুকি তৈরি করে।

যেমন অফিস কম্পিউটার কেউ যদি খোলা অবস্থায় ফেলে রাখে তবে সংবেদনশীল তথ্য অন্যের হাতে চলে যেতে পারে। তাই টাইম আউট অপশন চালু থাকলে নির্দিষ্ট সময়ে ব্যবহার না করলে সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে লক হয়ে যায়, এবং অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। এটি একদিকে ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষায় সহায়তা করে, অন্যদিকে অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যবহার রোধ করে। তাছাড়া ব্যাটারি চালিত ডিভাইস যেমন ল্যাপটপ ও মোবাইল টাইম আউট অপশন বিদ্যুৎ সাশ্রয়েও কার্যকর ভূমিকা রাখে। অপ্রয়োজনীয় স্ক্রিন জ্বলে থাকা কমে যায়, ফলে ব্যাটারির স্থায়ীত্ব বাড়ে।
 
অনেক প্রতিষ্ঠানেই এই ফিচার  বাধ্যতামূলক রাখা হয় যাতে কর্মীদের কম্পিউটার ব্যবহার নিয়ন্ত্রিত থাকে এবং ফাঁস হওয়া সম্ভাবনা কমে। সামগ্রিকভাবে বলা যায়, সিস্টেম সেটিংসের টাইম আউট আপশন চালু রাখা কেবল শক্তি সাশ্রয় ও নিরাপত্তার জন্যি নয়, বরং কাজের নিয়ম বজায় রাখা এবং ডীভাইসের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধির জন্যও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাই প্রতিটি ব্যবহারকারীর উচিত তাদের ডিভাইসে উপযুক্ত সময় অনুযায়ী টাইম আউট সেট করে রাখা, যাতে ব্যবহার শেষে স্ক্রিন লক হয়ে যায় এবং অপ্রত্যাশিত ঝুঁকি থেকে নিরাপদে থাকা যায়। 

অ্যান্টিভাইরাস বা ফায়ারওয়ালের প্রভাব

অ্যান্টিভাইরাস এবং ফায়ারওয়াল আমাদের ডিভাইস ও নেটওয়ার্ক নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে। এদের প্রভাবে বিভিন্ন দিক থেকে অনুভূত হয়। অ্যান্টিভাইরাস মূলত কম্পিউটার বা মোবাইলে প্রবেশ করা ভাইরাস, ম্যালওয়্যার স্পাইওয়্যার, র‍্যানসওয়্যার কিংবা ডাউনলোড স্ক্যান করে এবং ক্ষতিকর কোড পাওয়া গেলে তা কোয়ারেস্টাইন বা ডিলেট করে দেয়। ফলে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য, ফাইল ও সিস্টেম সুরক্ষিত থাকে। অন্যদিকে ফায়ারওয়াল কাজ করে একটি গেটকিপারের মতো। 

এটি ইন্টারনেট বা লোকাল নেটওয়ার্ক থেকে আসা ডেটা ট্রাফিক ফিল্টার করে এবং সন্দেহজনক সংযোগ ব্লক করে দেয়। ফলে হ্যাকারদের অননুমোদিত অ্যাক্সেস রোধ হয় এবং নেটওয়ার্কের ভেতরের নিরাপদ যোগাযোগ বজায় থাকে। তবে এদের কিছু সীমাবদ্ধ প্রভাবও আছে। যেমন, অ্যান্টিভাইরাস অনেক সময় সিস্টেমের গতি কমিয়ে দিতে পারে, আবার ফায়ারওয়াল অতিরিক্ত কনফিগার করা হলে বৈধ কিছু অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে প্রবেশে সমস্যা তৈরি করতে পারবে।

নেটওয়ার্ক শেয়ারিং সেটিংস ভুল কনফিগার করা

নেটওয়ার্ক শেয়ারিং সেটিংস ভুল কনফিগার করা হলে তা ব্যবহারকারীর জন্য বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টী করতে পারে। সাধারণত নেটওয়ার্ক শেয়ারিং এর মাধ্যমে একটি কম্পিউটারে, প্রিন্টার বা ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়। কিন্তু যদি সেটিংস সঠিকভাবে কনফিগার না করা হয় তবে ব্যবহারকারী কাঙ্ক্ষিত ডিভাইসে প্রবেশ করতে পারে না কিংবা ডেটা আদান-প্রদান ব্যাহত হয়। উদাহরণসরুপ, ফাইল শেয়ারিং চালু থাকলেও প্রয়োজনীয় পারমিশন ঠিকমতো দেওয়া না হলে অন্য ব্যবহারকারীর ফাইল অ্যাক্সেস করতে ব্যররথ হবে। আবার অনেক সময় ফায়ারওয়াল বা সিকিউরিটি সফটওয়্যারের কারণে শেয়ার করা নেটওয়ার্কে প্রবেশ সীমিত হতে পারে, যা ব্যবহারকারীর জন্য বিভ্রান্তিকর হয়ে ওঠে।

ভুল কনফিগারেশনের কারণে ডিভাইসগুলো একে অপরকে শনাক্ত করতে পারে এবং নেটওয়ার্ক "Access Denied" বা " Network Path Not Found" এর মত ত্রুটি দেখাতে পারবে। এছাড়া নেটওয়ার্ক শেয়ারিংয়ে অতিরিক্ত অনুমতি দিলে ডেটা সুরক্ষায় ঝুঁকি বাড়ে। যেমন- Public নেটওয়ার্কে ভুল্ভাবে শেয়ারিং চালু রাখা হলে অজানা কেউ আপনার ব্যক্তিগত ফাইক বা তথ্য অ্যাক্সেস করতে পারে। 

তাই সঠিক কনফিগারেশনের জন্য প্রাইভেট নেটওয়ার্ক নির্বাচন করে শুধু প্রয়োজনীয় ডিভাইসের জন্য শেয়ারিং অনুমোদোন দেওয়া উচিত। নেটওয়ার্ক শেয়ারিং সেটিংস ভুল কনফিগার করা মানেই ব্যবহারকারীর কাজের গতি ধীর হয়ে যাওয়া, ডেটা অ্যাক্সেসে সমস্যা তৈরি হওয়া এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ানো। তাই নেটওয়ার্ক ব্যবহারের সময় সচেতন থেকে সঠিক কনফিগারেশন নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। 

উইন্ডোজ ১০ মোবাইল হটস্পট বারবার বন্ধ হচ্ছে? সমাধান এখানে

উইন্ডোজ ১০ ব্যবহারকারীদের জন্য মোবাইল হটস্পট একটি উপকারী ফিচার, যা দিয়ে সহজেই কম্পিউটারকে ওয়াইফাই রাউটারের মতো ব্যবহার করা হয়। তবে অনেক সময় দেখা যায়, এই হটস্পট বারবার নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে যায় বা স্থায়ীভাবে চালু থাকে না। এর মূল কারণ হতে পারে পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট সেটিংস, নেটওয়ার্ক ড্রাইভার সমস্যা, কিংবা সিস্টেমের ডিফল্ট কনফিগারেশন। প্রথমেই যে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে তা হলো Windows10 এ যখন ডিভাইসটি আইডল অবস্থায় থাকে, তখন সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাওয়ার সেভিংস মোডে চলে যায়, ফলে হটস্পট বন্ধ হয়ে যায়। 

এ সমস্যা এড়াতে Control Panel থেকে Network Adapter Properties গিয়ে Power Managemant ট্যাব থেকে Allow the computer to turn off this deivce to save manager   থেকে নেটওয়ার্ক অ্যাডাপ্টার আপডেট করা জরুরি। আরেকটি সাধারন সমস্যা হলো windows settings এ থাকা মোবাইল হটস্পট অপশনে টাইম আউট ফিচার। ডিফল্টভাবে যদি কোনো ডীভাইস হটস্পট কানেক্ট না থাকে, তবে কিছু সময় পর এটি নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে যাবে। 
এ ছাড়া VPN সফটওয়্যার বা তৃতীয় পক্ষের ফায়ারওয়ালঅও হটস্পটের সাথে কনফ্লিক্ট তৈরি করতে পারে, তাই প্রয়োজনীয় কনফিগারেশন চেক করে নেওয়া উচিত। মোবাইল হটস্পট বারবার বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যা সমাধান করা খুব জটিল কিছু না। সঠিক ড্রাইভার আপডেট, পাওয়ার সিভিংস আপশন বন্ধ করা এবং হটস্পটের টাইম আউট সেটিংদ করে নিলে সহজেই এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান পাওয়া যায়। 

সিস্টেম আপডেটের অভাব বা বাগ 

সিস্টেম আপডেটের অভাব বা বাগ  আমাদের ডিভাইসের কার্যক্ষমতা বা নিরাপত্তার উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। যখন আমরা নিয়মিত সিস্টেম আপডেট করি না, ডিভাইসের সফটওয়্যারে অনেক পুরনো ত্রুটি বা দুর্বলতা থেকে যায়। এসব দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে হ্যাকাররা সহজে আক্রমণ চালাতে পারে, যার ফলে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি ভাইরাস আক্রমণ বা সাইবার হুমকির শিকার হতে হয়। তাছাড়া, পুরনো সিস্টেমের নতুন অ্যাপ বা সফটওয়্যার সঠিকভাবে কাজ করে না, ফলে ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা খারাপ হয়। 

আবার অনেক সময় দেখা যায় যে সিস্টেম আপডেটের অভাবে বাগ থেকে যায়, যেমন হঠাৎ সফটওয়্যার ক্র্যাশ করা, ইন্টারনেট সংযোগ সমস্যা।কিংবা ডিভাইসের গতি ধীর হয়ে যাওয়া।  এসব সমস্যা ব্যবহারকারীদের কাজের গতি ব্যাহত করে এবং উৎপাদনশীলতা কমিয়ে দেয়। অন্যদিকে যখন ডেভেলপারার আপডেট প্রকাশ করে, তখন সাধারণত নিরাপত্তা ঘাটতি পূরণ, নতুন ফিচার সংযোজন ও পুরানো বাগ ফিক্স করার কাজ করা হয়। কিন্তু আপডেট না করলে এসব সুবিধা পাওয়া যায় না।

এমনকি অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপ্লিকেশনও সঠিকভাবে চালু হয় না, কারণ এগুলো নতুন ভার্সনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি হয়। তাই সিস্টেম আপডেট না করার অভ্যাস দীর্ঘমেয়াদের ডিভাইসকে  নিরাপদ করে তুলে।ব্যবহারকারীর উচিত নিয়মিত আপডেটের চেক করা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সেগুলো ইনস্টল করা। যদিও অনেক সময় আপডেটের পরও কিছু বাদ থেকে যায়, তবে ডেভলপাররা পরবর্তী আপডেটের সেই সমস্যার সমাধান করা থাকে। সুতরাং আপডেট এড়িয়ে যাওয়া বা অবহেলা করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়, বরং নিয়মিত আপডেট গ্রহণ করাই নিরাপদ ও কার্যকর ব্যবহারের জন্য সবচেয়ে ভালো উপায়। 

হটস্পট চালু থাকলেও ইন্টারনেট কাজ না করার কারণ কি?

হটস্পট চালু থাকলেও ইন্টারনেট কাজ না করার সমস্যাটি অনেক সময় ব্যবহারকারীদের জন্য বিরক্তিকর হয়ে দাঁড়ায়। এর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে একটি হলো নেটওয়ার্ক কানেকশনের  অস্থিতিশীলতা। অনেক সময় আমরা মোবাইলে ডেটা দিয়ে হটস্পট চালু করি, কিন্তু যদি মোবাইলে সিগন্যাল দুর্বল থাকে বা ডেটা প্যাকেট শেষ হয়ে যায়, তবে সংযুক্ত ডিভাইস ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে না। আবার কিছু ক্ষেত্রে মোবাইল নেটওয়ার্ক সেটিংস বা আইপি কনফিগারেশনের ত্রুটি থেকে যায় এই সমস্যা দেখা দেয়।
উইন্ডোজ-১০-মোবাইল-হটস্পট-বারবার-বন্ধ-হচ্ছে

উদাহরণস্বরূপ হটস্পট সংযুক্ত ডিভাইস সঠিক আইপি ঠিকানা না পেলে ইন্টারনেট অ্যাক্সেস পায় না। এছাড়া অনেক সময় মোবাইলে ডিভাইস ডেটা শেয়ারিং সীমাবদ্ধ করা থাকে বা নির্দিষ্ট ডিভাইসে ডেটা স্পিড সীমিত করে দেওয়া হয়। যা ইন্টারনেটের কাজ না করার অন্যতম কারণ। হটস্পট চালু থাকলেও যদি মোবাইল ডিভাইস ডিভাইস ব্যাকগ্রাউন্ডে অতিরিক্ত অ্যাপস ব্যবহার করে, তাহলে ব্যান্ডউইথ কমে গিয়ে অন্যান্য সংযুক্ত ডিভাইসে ইন্টারনেট ধীরগতির হয়ে পড়ে কিংবা একেইবারে কাজ করে না। 

আবার অ্যান্টিভাইরাস বা ফায়ারওয়াল অনেক সময় হটস্পট থেকে আসা ডেটা ব্লক করে দিতে পারে, যার ফলে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। আরেকটি সাধারণ কারণ হলো সফটওয়্যার বা ড্রাইভার সমস্যাজনিত বিষয়। এমনকি অনেক সময় সিস্টেম বাগ বা ফোনের অপারেটিং সিস্টেম সমস্যা থাকলেও দেখা দেয় হটস্পট চালু থাকা সত্ত্বেও ইন্টারনেট কাজ না করলে প্রথমে মোবাইল ডেটা সঠিকভাবে চলছে কিনা, সিগন্যাল পর্যাপ্ত কিনা এবং আইপি কনফিগারেশন ঠিক আছে কি না তা যাচাই করা উচিত। 

পরিশেষে লেখকের মতামত

উইন্ডোজ ১০ মোবাইল হটস্পট একটি কার্যকর ফিচার, যা ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ থেকে সহজেই ইন্টারনেট শেয়ার করার সুযোগ দেয়। তবে অনেক ব্যবহারকারী অভিযোগ করেন যে উইন্ডোজ ১০ মোবাইল হটস্পট স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায় বা কখনো সংযোগ ঠিকমতো কাজ করে না। এর পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, যেমন নেটওয়ার্ক অ্যাডাপ্টারের সমস্যা, পাওয়ার মোড, সিস্টেম বাগ বা অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়ারের বাধা।
পরিশেষে, আমার মতামতে উইন্ডোজ ১০ মোবাইল হটস্পটের সমস্যা সমাধানের জন্য কিছু সহজ পদ্ধতি অনুসরন করা উচিত। প্রথমত নেটওয়ার্ক অ্যাডাপ্টার ড্রাইভার আপডেট করুন এবং পাওয়ার সেভার মোড বন্ধ রাখুন। দ্বিতীয়ত Windows Mobile Hotspot Timeout সেটিংস পরিবর্তন করুন যাতে এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয় না। যদি সমস্যাটি সমাধান না হয়, তাহলে সিস্টেম আপডেট চেক করুন এবং প্রয়োজনে নেটওয়ার্ক রিসেট করুন। এই ধাপগুলো অনুসরণ করলে উইন্ডোজ ১০ মোবাইল হটস্পটের সমস্যার কার্যকর সমাধান পাওয়া সম্ভব। (ধন্যবাদ)

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ট্রিক্সমিয়া নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url